শাওন আশরাফ :তখন বয়স চৌদ্দ কি পনেরো, মাত্র কয়েক মাসের জন্য সুইডেন থেকে দেশে এসেছিলেন। ছুটি কাটিয়ে ফিরে যাওয়ার চার দিন আগে একটি বিজ্ঞাপন এজেন্সি থেকে ফোন পান। নিজের এবং পরিবারের আগ্রহে সেই বিজ্ঞাপনটি করেন। এটি প্রচারে আসতেই প্রশংসায় ভাসতে থাকেন।বিজ্ঞাপনটি সে সময় এত সাড়া ফেলে যে মুহূর্তেই প্রস্তাব আসতে থাকে সিনেমার। রাজি হয়ে নাম লিখিয়েও ফেলেন। প্রথম সিনেমাতেই করেন বাজিমাত, গড়েন রেকর্ডও। তিনি আর কেউ নন, এক সময়ের নন্দিত ও মিষ্টি হাসির চিত্রনায়িকা তামান্না হুদা।পুরো নাম তামান্না হাসিন হুদা হলেও দর্শকমহলে তিনি তামান্না নামেই জনপ্রিয়। বেড়াতে এসে মুহূর্তের মধ্যেই বনে গেলেন নায়িকা। নব্বইয়ের মাঝামাঝিতে তার আগমন ঘটে অনেকটা নক্ষত্রের মতো। ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত টানা সিনেমায় অভিনয় করেন।মাত্র ৫ বছরের ক্যারিয়ারেই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় সিনেমা ছেড়ে দিয়ে ফিরে যান সুইডেনে। এখনো সেখানেই রয়েছেন।
অভিনেত্রীর বাইরেও তামান্না একজন ডেন্টিস্ট। পাশাপাশি সুইডেনের নৃত্যশিল্পী অ্যাসোসিয়েশনের ড্যান্স লিডার হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন তিনি।
সিনেমা ছেড়ে বিদেশবিভূইয়ে এখন কাটছে সময়, সিনেমার পুরনো দিনগুলো নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে।বরাবরই স্পষ্টবাদী এ নায়িকা কথা বলেন সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও।কেমন কাটছে জীবন, এমন প্রশ্নে কালের কণ্ঠকে তামান্না হুদা বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, স্বামী-সংসার-সন্তান নিয়ে ভালো আছি। আমি তো এখানে একটি নাচের প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছি। ভালোই যাচ্ছে। এ ছাড়া পরিবারকে সময় দিচ্ছি, এভাবেই কেটে যাচ্ছে বলা যায়।’
যেহেতু অনেক বছর ধরেই সুইডেনে, অভিনয়কে তো নিশ্চয় মিস করেন! সেখানকার ইন্ডাস্ট্রিতে তো চাইলেই অভিনয় করতে পারতেন। কথার রেশ ধরে তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে কিছু পেয়েছিলাম কিন্তু আমি আগ্রহ পাইনি। কারণ তারা যেভাবে কাজ করে, যে ধরনের কাজ করে সেগুলো আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি আমার দেশে যে সুবর্ণ সময়টা পার করে এসেছি, এখনো যে তার জন্য অনেক মানুষের ভালোবাসা পাই সেটাতেই আমি তৃপ্ত। ছেলে-মেয়েরা বড় হচ্ছে, মাঝেমধ্যে তাদের সঙ্গে সেই সময়গুলো নিয়ে গল্প করি।’
Add Comment